বগুড়ার বিলে ছেঁড়া টাকা : ৩ কর্মকর্তাকে শোকজ

হাওর বার্তাঃ বগুড়ায় বাংলাদেশ ব্যাংকের বাতিল নোটের টুকরা পৌরসভার নির্ধারিত ডাম্পিং স্টেশনের পরিবর্তে অন্যত্র ফেলায় সংস্থাটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের তিন কর্মকর্তাকে শোকজ করা হয়েছে।

বুধবার বগুড়া পৌরসভার মেয়র একেএম মাহবুবর রহমান এ-সংক্রান্ত আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। শোকজপ্রাপ্তরা হলেন বগুড়া পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিদর্শক মামুনুর রশিদ, একই বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম ও বস্তি উন্নয়ন কর্মকর্তা রাখিউল আবেদীন। বগুড়া পৌরসভার সচিব রেজাউল করিম জানান, ওই তিন কর্মকর্তাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে শোকজের জবাব দাখিল করতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, এর পাশাপাশি যে ট্রাকে বাতিল নোটের ওই টুকরাগুলো বহন করা হয়েছিল; সেটির ভাড়ার চুক্তিও বাতিল করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বগুড়া শাখার বাতিল করা বিপুল পরিমাণ টাকার নোটের টুকরা গত রোববার জেলার শাজাহানপুর উপজেলার খাড়ুয়া বিলে ফেলা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় লোকজনের চোখে পড়ার পর তা নিয়ে রীতিমতো হুলস্থূল কাণ্ড ঘটে যায়।

স্থানীয় জনগণের সন্দেহ এক বা একাধিক ব্যক্তি অবৈধভাবে অর্জিত বিপুল পরিমাণ টাকা মেশিনে কেটে পানিতে ফেলে গেছে। সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে ক্যাসিনো ও জুয়ার আস্তানাগুলোতে অভিযান শুরু করার পর তাদের ওই সন্দেহ আরো বদ্ধমূল হয়। যে কারণে মঙ্গলবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই এলাকায় শত শত মানুষের ভিড় জমে যায়। খবর পেয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

পরে পুলিশ খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, টুকরা করা ওই টাকার নোটগুলো বাতিল ও অপ্রচলনযোগ্য। বর্জ্য হিসেবে সেগুলো নির্ধারিত স্থানে ফেলার জন্য ব্যাংকের পক্ষ থেকে বগুড়া পৌরসভাকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল। তবে পৌরসভার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীরা রোববার সেগুলো সংগ্রহ করে নির্ধারিত স্থানে না ফেলে ওই বিলের ধারে ফেলে যান। তবে মঙ্গলবার দুপুরের পর দৈনিকগুলোর অনলাইন সংস্করণ এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর জনমনে বিপুল পরিমাণ টাকার টুকরা নিয়ে সৃষ্ট সন্দেহও দূর হয়।

বগুড়া পৌরসভার সচিব রেজাউল করিম জানান, বগুড়া পৌরসভা এলাকার বর্জ্য ফেলার জন্য সদর উপজেলার বাঘোপাড়া এলাকায় ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হয়েছে। পৌরসভার পক্ষ থেকে ভাড়া করা ১২টি ট্রাকে প্রতিদিন বর্জ্যগুলো নিয়ে সেখানে ফেলা হয়। নিয়ম অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্জ্যগুলোও সেখানে ফেলার কথা ছিল। কিন্তু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মীদের গাফিলতির কারণে ভাড়ায় নিয়োজিত ট্রাকের চালক সেগুলো শাজাহানপুরের খাড়ুয়া বিলে ফেলে আসেন।

তিনি বলেন, ‘বিষয়টি জানার পর মঙ্গলবার রাতেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের ওই তিন কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে শোকজের কথা জানানো হয়। গতকাল তাদের সেটি লিখিতভাবে দেওয়া হয়েছে।’

বগুড়া পৌরসভার মেয়র একেএম মাহবুবর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের বাতিল নোটের টুকরা অপসারণের কাজটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। এ ক্ষেত্রে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেননি। তাই তাদের শোকজ করা হয়েছে। যুক্তিসংগত জবাব দিতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর