রিমান্ডে থাকা সেই জি কে শামীম ও খালেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত

হাওর বার্তাঃ রিমান্ডে থাকা যুবলীগ নেতা জি কে শামীম ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান যুগান্তরকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসী ও মানি লন্ডারিং বিষয়ে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে বিএফআইইউ তা অনুসন্ধান করে। সম্প্রতি এসব অপরাধে যারা গ্রেফতার হয়েছেন তাদের হিসাবও যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। অনুসন্ধানকালে তাদের হিসাবে টাকা জমা হবে কিন্তু উত্তোলন করতে পারবে না।

জি কে শামীমের ব্যাংক হিসাবে ৩০০ কোটি টাকা আছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তার সব ধরনের লেনদেন স্থগিত (অবরুদ্ধ) করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সূত্র জানায়, গত রোববার সকালে জি কে শামীমের হিসাব থেকে টাকা উত্তোলনের জন্য বড় অঙ্কের বেশ কয়েকটি চেক ব্যাংকে জমা পড়ে। এ সময় ব্যাংকগুলো থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগাযোগ করে পরামর্শ চাওয়া হয়। পরে বাংলাদেশ ব্যাংক দুপুরের মধ্যেই লেনদেন স্থগিতের নির্দেশনা জারি করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়, জি কে শামীম, তার স্ত্রী ও মা-বাবার নামে থাকা সব ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করতে হবে।এছাড়া এ-সংক্রান্ত সব তথ্য পাঁচ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংককে জানাতে বলা হয়েছে।

অবৈধভাবে আয় করা প্রচুর অর্থের মালিক এস এম গোলাম কিবরিয়া ওরফে শামীম। তিনি নিজের নাম সংক্ষেপ করে বলতেন জি কে শামীম।আর তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জি কে বিল্ডার্সের মালিক তিনি।

গত শুক্রবার নিকেতনের অফিস থেকে গ্রেফতার করা হয় জি কে শামীমকে। তার অফিসে থাকা নগদ দেড় কোটি টাকা ও ১৬৫ কোটি টাকার এফডিআরের কাগজ জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। উদ্ধার করা হয় বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য। অস্ত্র ও মাদক মামলায় ১০ দিনের রিমান্ডে আছেন জি কে শামীম।

এর আগে বুধবার অবৈধ অস্ত্র ও ইয়াবা রাখার অপরাধে খালেদকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। পরদিন তার বিরুদ্ধে অস্ত্র, মাদক ও মানি লন্ডারিং মামলা করা হয়। এর মধ্যে মাদক ও অস্ত্র মামলায় সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এছাড়া মামলার তদন্তভার দেয়া হয় মহানগর গোয়েন্দাকে (ডিবি)।

জানা গেছে, জি কে শামীম ও তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কর ফাঁকি দিচ্ছে কি না তার সন্ধানে নেমেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)। ইতিমধ্যে কর সার্কেল থেকে আয়কর নথি অধিকতর তদন্তের জন্য সিআইসিতে তলব করা হয়েছে।

এনবিআর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনা পাওয়ার পর জি কে শামীমের কর ফাঁকির অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। আয়কর রিটার্নে ঘোষিত সম্পদ বিবরণীর সঙ্গে প্রকৃত সম্পদের গরমিল রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া তার লাইফস্টাইলের সঙ্গে প্রকৃত জীবনযাপনে অসঙ্গতি রয়েছে। কর ফাঁকি দিতেই তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে রিটার্নে মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর