তাফসির পরিচিতি: পূর্বের সকল তাফসিরের সারনির্যাস বলা হয় তাফসীরে রুহুল মাআনীকে

হাওর বার্তা ডেস্কঃ তাফসীরে রুহুল মাআনী। এই কিতাবের পূর্ণ নাম হলো ‘রুহুল মাআনী ফী তাফসীরিল কোরআনিল আযীম ওয়াস সাবয়িল মাছানী’। লেখক : হিজরী তেরশ শতাব্দির প্রসিদ্ধ আলেম আল্লামা শিহাবুদ্দীন মাহমূদ ইবনে আবদুল্লাহ আল-আলুসী রাহ. (ইনতিকাল ১২৭০ হিজরী)। তিনি ছিলেন বাগদাদের অধিবাসী এবং হানাফী মাযহাবের অনুসারী।

তাফসীরে রুহুল মাআনী যেহেতু একেবারে পরবর্তী যুগের রচনা, তাই এর রচয়িতা পূর্ববর্তী যুগের তাফসীর গ্রন্থগুলো থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা নেওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। ফলে তিনি তাঁর রচনায় অনেক তাফসির গ্রন্থের গুরুত্বপূর্ণ আলোচনাকে সন্নিবেশিত করেছেন। এতে কোরআনের শব্দ বিশ্লেষণ, বাক্য বিশ্লেষণ, কোরআনের সাহিত্যপূর্ণ উপাস্থাপন ও অলংকারিক বিবরণ এবং মাসাইল ও আহকাম, ইসলামী আকীদা-বিশ্বাস, তাসাওউফ ও আত্মশুদ্ধি, ফালসাফা ও দর্শন ইত্যাদি বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। সেইসঙ্গে আয়াত সংশ্লিষ্ট হাদীস ও সাহাবায়ে কেরামের বক্তব্য সম্পর্কেও দীর্ঘ আলোচনা পেশ করেছেন। মোটকথা, আয়াতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো দিক যেন অনালোচিত না থাকে সেই চেষ্টা তিনি করেছেন।

হাদীস বর্ণনার ক্ষেত্রে আল্লামা আলুসী রাহ. অন্য অনেক তাফসিরকারদের তুলনায় সতর্ক ও সংযত।

এসব দিক বিবেচনায় গ্রন্থটিকে পূর্ববর্তী গ্রন্থাদির সারনির্যাস বলা যেতে পারে। সেজন্য শাইখুল ইসলাম মুফতি মুহাম্মাদ তাকী উসমানী বলেন, বর্তমানে কোরআনের তাফসির বিষয়ক কোনো কাজ তাফসীরে রুহুল মাআনীর সাহায্য থেকে অমুখাপেক্ষী হতে পারে না। [উলূমুল কোরআন, পৃষ্ঠা : ৫০৬]

এই কিতাব সম্পর্কে আল্লামা আনোয়ার শাহ কাশ্মিরী রাহ. বলেন, আমার মতে কোরআন ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে তাফসীরে রুহুল মাআনী তেমনি, যেমন সহীহ বুখারী ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে ফতহুল বারী। [ইয়াতীমাতুল বায়ান ফী শাইইম মিন উলূমিল কোরআন, পৃষ্ঠা : ৪৩]

কিতাবটি আরব-আজমের বহু মাকতাবা থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বৈরুতের বিখ্যাত মাকতাবা ‘দারুল কুতুবিল ইলমিয়্যা’ থেকে ১৬ খণ্ডে (১৫ খণ্ড মূল কিতাব ও ১ খণ্ড সূচিপত্র) প্রকাশিত হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর