মিষ্টি কুমড়া চাষে পাঁচ শতাধিক কৃষকের ভাগ্য বদল

ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে দেড় শতাধিক হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয়েছে। উপজেলার দত্তের বাজার, নিগুয়ারী, টাঙ্গাব, পাঁচবাগ ও চরআলগী ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে মিষ্টি কুমড়া চাষ করে বদলে গেছে অন্তত পাঁচ শতাধিক কৃষকের ভাগ্য। এখন উপজেলার দিগন্তজুড়ে মিষ্টি কুমড়া ক্ষেতের সমারোহের পাশাপাশি বাম্পার ফলনে খুশি চাষিরা। শুধু ধান চাষের ওপর নির্ভরশীল কৃষি জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ এনে দিয়েছে নতুন গতি। কৃষকদের জীবন-জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে কৃষির এই সফল বিবর্তন। এই পাঁচ ইউনিয়নের উৎপাদিত মিষ্টি কুমড়া রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রফতানি হচ্ছে।
উর্বর বেলে-দোআঁশ মাটির প্রাচুর্যের কারণে উপজেলার দত্তের বাজার, নিগুয়ারী, টাঙ্গাব, পাঁচবাগ ও চরআলগী এই পাঁচ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ধানের চেয়ে রবিশস্য ও সবজি আবাদ বেশি হয়। বর্তমানে উপজেলার টাঙ্গাব ইউনিয়নের বাখালী, বাশিয়া ও টাঙ্গাব গ্রামে, পাঁচবাগ ইউনিয়নের চরশাঁখচূড়া, খুরশিদ মহল, গাভীশিমুল গ্রামে, চরআলগী ইউনিয়নের বালুয়া কান্দা, জয়ারচর ও চরআলগী গ্রামে এবং দত্তের বাজার ও নিগুয়ারী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ব্যাপকভাবে মিষ্টি কুমড়া উৎপাদিত হচ্ছে। রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের উপজেলার মিষ্টি কুমড়া ব্যবসায়ীদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে এতদাঞ্চলের রবিশস্যের অন্যতম মিষ্টি কুমড়া। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএস ফারহানা হোসেন জানান, টাঙ্গাব, চরআলগী, নিগুয়ারী ও দত্তের বাজারসহ কয়েকটি ইউনিয়নে এবার মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। দেড় শতাধিক একর জমিতে মিষ্টি কুমড়া আবাদ করে লাভবান হয়েছেন অনেক কৃষক।
কৃষকরা জানান, প্রতি একর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করতে খরচ পড়ে ১১ থেকে ১৩ হাজার টাকা। টাঙ্গাব গ্রামের মিষ্টি কুমড়া চাষি মুর্শিদ উদ্দিন জানান, এবার তিনি ৭ একর জমিতে মিষ্টি কুমড়া চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে প্রায় ৭৫ হাজার টাকা। এখন পর্যন্ত তিনি লক্ষাধিক টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে পেরেছেন। তিনি আশা করছেন আরো অন্তত দুই লাখ টাকার মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে পারবেন। এ ছাড়াও এ ইউনিয়নে মিষ্টি কুমড়া চাষে যারা লাভবান হয়েছেন এদের মধ্যে আশাকুল, জহিরুল, লিয়াকত, আজিম উদ্দিন, মহসিন খান, মজিবুর রহমানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় কৃষি বিভাগের অনুপ্রেরণায় রিলে ক্রোক পদ্ধতিতে জমিতে টমেটো উত্তোলনের কিছুদিন পূর্বে তাদের পরামর্শক্রমে এই সাথী ফসলের চাষ করি। আরো কয়েকটি ইউনিয়নের চাষিরা যুগপৎ এই মৌসুমি ফসল আবাদ করে অভাবনীয় সাফল্য পায় বলে জানান তারা।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর