মনু নদী রক্ষা বাধের ২২ স্থানে ভাঙন, ঝুঁকিতে ২৫ গ্রাম

মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার মনুনদীর বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধের ২২টি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে ভাঙনের ফলে অসংখ্য বসত-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে নদী তীরবর্তী ২৫টিরও বেশি গ্রামের কয়েক শতাধিক বাড়ি-ঘর। এনিয়ে ওই এলাকার মানুষদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গতকাল যোগাযোগ করার পরও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। বিষয়টি নিয়ে উপজেলার উন্নয়ন সভায় বেশ কয়েকবার আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু কার্যকর কোনো পদক্ষেপও নেয়া হচ্ছে না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাজনগর উপজেলায় মনু নদীতে পানি বৃদ্ধি ও উজান থেকে নেমে আসা অস্বাভাবিক পানি তুলে নদীর উভয়তীরে প্রতিবছরই ভাঙনের সৃষ্টি হচ্ছে। ভাঙনের ফলে নদী তীরের বেশ কয়েকটি গ্রামের বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধ, ঘরবাড়ি, মসজিদ নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। মনু নদীর রাজনগর অংশে বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধের প্রায় ২২টি স্থানে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এতে ওই এলাকার ২৫টিরও বেশি গ্রামের শতশত বাড়ি-ঘর ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। ইতিমধ্যে ভাঙনের ফলে অসংখ্য বসত-বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে নদী তীরবর্তী বিভিন্ন মসজিদ ও বহু কবরস্থান। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বারবার যোগাযোগ করার পরও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এনিয়ে মানুষের মাঝে ক্ষোভ-হতাশা বিরাজ করছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেও ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মনু নদীর উভয় তীরে শ্বাসমহল, হরিপাশা, উজিরপুর, পণ্ডিতনগর, তারাপাশা, কামারচাক, কান্দিরকুল, আকুয়া, ভাঙ্গারহাট, একামধু, আদিনাবাদ, মালিকানা, কোনাগাঁও, শ্যামেরকোনা, মূর্তিকোনা, কাজিরচক, জাঙ্গালিয়া, দস্তিদারের চক, খাসপ্‌্েরমনগর, প্রেমনগর সহ ২২টি স্থান ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব ভাঙন মেরামতে চলতি বছর কোন কাজ হয়নি। শ্বাসমহল এলাকায় গত ২০১১-১২ অর্থবছরে ভাঙন রোধে মাত্র ৪০ মিটার ব্লক ফেলা হয়েছিল। এর পর আর কোনো কাজই হয়নি।
এ ব্যাপারে টেংরা ইউনিয়নের উজিরপুর গ্রামের জহির আলী (৭২) ও মান্নান মিয়া (৭০) বলেন, ‘আমরা বহুবার পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষের কাছে বাঁধ মেরামতের জন্য দাবি জানিয়ে আসছি। তারা কয়েকবার তা পরিদর্শন করে বাঁধ মেরামতের আশ্বাস দেন। কিন্তু এরপর আর কোন খবর করেন না। বারবার যোগাযোগ করে ব্যার্থ হয়েছি। মনে হচ্ছে আল্লার ঘর মসজিদ, শেষ ঠিকানা কবরস্থান ও আমাদের বাড়ি-ঘর রক্ষা করতে পারবো না।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর