বিষমুক্ত আম

বৃক্ষের সঙ্গেই যেন সখ্য তার। পুরো বাড়িটাই সবুজ অরণ্যের মতো করে গড়ে তুলেছেন। আম, জাম, নারিকেল, বেল, তাল মিলিয়ে ফলদ গাছে ভরপুর। তেমনি পাশাপাশি শত শত বনজ গাছও রয়েছে এ বাড়িতে। তবে এসব গাছের মধ্যে প্রায় ২ শতাধিক বাহারি জাতের বিভিন্ন আম গাছ লাগিয়ে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার আড়ুয়াবর্নি গ্রামের আশ্রাব আলী শেখ। আর এ বাগানে বিষমুক্ত আমচাষ করেছেন তিনি। মানুষকে বিষমুক্ত আম খাওয়ানোর জন্য তার এ পরিকল্পনা।
আশ্রাব আলী শেখের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছোটবেলা থেকেই তিনি গাছ লাগাতে ভালোবাসেন। কিন্তু গাছ লাগানোর মতো উপযুক্ত জায়গা না থাকায় তার এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়নি এতদিন। অর্থ উপার্জনের জন্য তিনি দেশের বাইরে কাটিয়েছেন অনেক বছর। এরপর দেশে ফিরে উপার্জিত অর্থ দিয়ে জায়গা কিনতে শুরু করেন। এক এক করে জায়গা কিনে নেন কয়েক একর। এছাড়া তার স্ত্রী জাহানারা বেগম একজন সিনিয়র নার্স হিসেবে চাকরি করে যে মাইনে পান এর পুুরোটাই স্বামীর বাগান করার পেছনে ব্যয় করেন। বর্তমানে কয়েক একর জায়গাজুড়ে তিনি একটি বিশাল আমবাগান তৈরি করেছেন। বাগানের এসব গাছে এ বছর আমও ধরেছে প্রচুর। আমরূপালি, মালদাহ, হিমসাগরসহ অসংখ্য নানা জাতের আমে নুয়ে পড়ছে ডালপালা। গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে আম। ফলন হয়েছে অন্য বছরের চেয়ে অনেক ভালো। বাজারে বর্তমানে দামও বেশ চড়া। এ অবস্থায় বাজার দর ভালো থাকলে কয়েক লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা করছেন আশ্রাব আলী। তবে তিনি কোনো প্রকার বিষপ্রয়োগ ছাড়াই এ আম চাষ করেছেন। আশ্রাব আলী জানান, উপকারের জন্য মানুষ ফল কিনে খায় কিন্তু বাজারে বর্তমানে আমসহ যে ফলমূল পাওয়া যায় তাতে রাসায়নিক বিষক্রিয়া রয়েছে। যেটি মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। যে কারণে তিনি বিষমুক্ত আম খাওয়াবেন মানুষকে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আবুল হাসান জানান, আশ্রাব আলী শেখ একজন ভালো চাষি। আমসহ বিভিন্ন ফলের গাছ লাগানোর পাশাপাশি সবজি ও অন্যান্য ফসল ফলাতে তার জুুড়ি মেলা ভার। একজন সফল চাষি হিসেবে জাতীয়ভাবে তাকে পুরস্কৃত করার জন্য একটি সুপারিশ পাঠানোর পরিকল্পনা চলছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর