টেস্টে বাংলাদেশ আর পিছিয়ে নেই। যে কোনো দেশকে নাকানি চুবানি খাওয়াতে পারে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ৯টি টেস্টে জয় পেয়েছে। ৯টি টেস্টে জয়ের নায়েদের দেখতে পাচ্ছেন ছবিতে। এই যাত্রায় দশম টেস্ট খেলুড়ে দেশ হিসেবে যাত্রা শুরুর পর দেখতে দেখতে সাদা পোশাকে ১০০টি ম্যাচ খেলে ফেলল বাংলাদেশ। সাফল্যের হিসেবে জয়ই যখন সর্বোচ্চ মানদণ্ডের, তাতে টাইগাররা পাচ্ছে মাত্র ৯-নম্বর! ১৬ বছরের টেস্ট যাত্রায় মাত্র ৯টি জয়ের মুখ দেখেছে লাল-সবুজরা। যার প্রথমটি এসেছিল ১০ জানুয়ারি, ২০০৫ সালে; চট্টগ্রামের এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে প্রতিপক্ষ ছিল জিম্বাবুয়ে। আর সর্বশেষটি কলম্বোর পি সারায় শততম টেস্টের মাইলফলকের ম্যাচে। জয়ের মুখ দেখা এই ৯ টেস্টে সাফল্যের কারিগর হয়ে ছিল অনেকের ব্যাটে-বলের নৈপুণ্য। তবে প্রতিটি ম্যাচই বেছে নিয়েছিল নির্দিষ্ট একজন নায়ককেও। ক্রিকেটীয় ভাষায় যাকে বলা হয় ‘ম্যাচ সেরা’। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক নয় টেস্টে জয়ের সেই নায়কদের- এনামুল হক জুনিয়র এমএ আজিজ স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম (৬-১০ জানুয়ারি, ২০০৫; প্রতিপক্ষ জিম্বাবুয়ে) সেই ম্যাচে টেস্ট অভিষেকের প্রায় পাঁচ বছর পর প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তখনকার দলীয় সর্বোচ্চ প্রথম ইনিংসের ৪৮৮ রানে যাত্রা শুরু হয়েছিল। পরে জিম্বাবুয়েকে প্রথম ইনিংসে ৩১২ রানে অলআউট করে স্বাগতিকরা দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে গিয়েছিল ২০৪ রানে। পঞ্চম দিনে গড়ানো সেই ম্যাচে স্পিনার এনামুল হক জুনিয়রের ঘূর্ণিতে দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়েকে ১৫৪ রানে অলআউট করে দিয়েছিল বাংলাদেশ। ২২৬ রানে জয়ী সেই ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে ২২.২ ওভারে ৪৫ রান খরচায় ৬ উইকেট নিয়ে নায়ক বনে গিয়েছিলেন এনামুল জুনিয়র। অথচ প্রথম ইনিংসে ২৬ ওভার বল করে ৫৫ রান খরচায় উইকেটশূন্য ছিলেন এই স্পিনার। প্রথম টেস্ট জয়ের ম্যাচ সেরার ট্রফিটি উঠেছিল এনামুলের হাতেই। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ সেন্ট ভিনসেন্ট (৯-১৩ জুলাই, ২০০৯; প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ) বোর্ডের সঙ্গে জটিলতার কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজের শীর্ষ পর্যায়ের অনেক ক্রিকেটারই দলে ছিলেন না। খর্বশক্তির সেই দলের বিপক্ষে বিদেশের মাটিতে প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। নিজেদের ৬০তম ম্যাচে প্রথম ইনিংসে কোনো ফিফটি ছাড়াই ২৩৮ রান তুলেছিল টাইগাররা। পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৩০৭ রান তোলে। ৬৯ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে তামিম ইকবালের (১২৮) প্রথম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ ৩৪৫ রান তুলে ২৭৬ রানের লিড নেয়। আর ক্যারিবীয়দের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮১ রানে গুটিয়ে যায় মাহমুদউল্লাহর স্পিনে। ৯৫ রানে জয়ের সেই ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ দুই ইনিংসে যথাক্রমে ৯ ও ৮ রানে ব্যর্থতার পরিচয় দেওয়ার পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৫১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে নায়ক বনে গিয়েছিলেন। প্রথম ইনিংসেও ৩টি উইকেট তুলে নিয়েছিলেন তিনি। সাকিব আল হাসান সেন্ট জর্জ, গ্রেনাডা (১৭-২০ জুলাই, ২০০৯; প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ) পরের ম্যাচেই আরেকটি দুর্দান্ত জয়ের মুখ দেখেছিল বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের করা ২৩৭ রানের জবাবে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৩২ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল টাইগাররা। পরে ক্যারিবীয়রা দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৯ রানে গুটিয়ে গেলে ২১৫ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ। একপর্যায়ে ৬৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বসার পর ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন সাকিব। ১৩ চার ও ১ ছয়ে ৯৭ বলে অপরাজিত ৯৬ রানের একটি ইনিংস খেলে ম্যাচ ছিনিয়ে নেন।