চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উন্নতি চাই

কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে বাংলাদেশ এক দিকে ইজ্জতের ভয়। আরেক দিকে ভয় নিচে নেমে যাওয়ার। বুধবার ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ায় আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করতে হয়েছে। দ্বিতীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৪ উইকেটে হার। তাই বাকি দুই ম্যাচে হারলে রয়েছে র‌্যাঙ্কিংয়ে অবনমনের শঙ্কা। বিশেষ করে আজ ডাবলিনের ম্যালাহাইডে আইরিশদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচে হেরে গেলে নিশ্চিত ভাবেই পয়েন্ট হারাবে টাইগাররা। যদি সবকটি ম্যাচ হেরে যায় তাহলে অবনমন হয়ে ৭ নম্বার থেকে নেমে যেতে হবে ৮ এ। এমন অবস্থায় আজ জয় ছাড়া কোনো বিকল্প নেই মাশরাফি বাহিনীর সামনে। বুধবারও ব্ল্যাক ক্যাপদের বিপক্ষে ব্যাটিং ভালো হয়নি। শুরুটা ভালো হলেও ব্যাটসম্যানরা বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হয়েছে। সৌম্য সরকার, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহীম ফিফটি হাঁকালেও সেট হয়ে আউট হয়েছেন। আবার ২৫৭ রানের পুঁজি পেয়েও বোলাররাও তেমন কিছু করতে পারেননি। যে কারণে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা বোলিং-ব্যাটিং দুই বিভাগেই উন্নতি চেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘শুরুর দিকে বোলিং আরো ভালো হতে পারতো, বিশেষ করে আমার। সাকিব ভালো করেছে। আমি পারিনি। ব্যাটিংয়ে আমাদের ২০ রানের ঘাটতি ছিল। জুটি গড়েছি আমরা, কিন্তু বড় করতে পারিনি। আউট হয়ে গেছি।’ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আজ ম্যাচটি মাঠে গড়াবে বাংলাদেশ সময় বিকাল পৌনে ৪টায়।
প্রথম ম্যাচে আইরিশদের বিপক্ষে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ দল। ৭০ রানে ৪ উইকেট হারানো দলকে তামিম ইকবাল ও মাহমুদুল্লাহ টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন ১৫৭ রান পর্যন্ত। এরপর বৃষ্টি এলে খেলা পরিত্যক্ত হয়। তাই আজ আইরিশদের বিপক্ষে নিজেদের ব্যাটিং-বোলিংয়ে সেরাটাই চেয়েছেন দলের অধিনায়ক। বোলারদের মধ্যে গতকাল মোস্তাফিজুর রহমান ও রুবেল হোসেন ছাড়া আর কেউই কিছু করতে পারেননি। বিশেষ করে স্পিনাররা। যেখানে অফ ব্রেকার ইশ সোধি নিয়েছেন ২ উইকেট সেখানে সাকিব, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুদুল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতরা ছিলেন শূন্য হাতে। তবে আজকের (আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে) ম্যাচের আগে কিছুটা হলেও স্বস্তিতে আছেন অধিনায়ক মাশরাফি। কারণ সৌম্য সরকার ও মাহমুদুল্লাহ রানে ফিরেছেন তার সঙ্গে মোস্তাফিজ ও রুবেল হোসেনের বোলিংয়ে আশা দেখছেন তিনি। হতাশার ম্যাচেও কিছু ইতিবাচক দিক নিয়ে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘সৌম্য রান করেছে, মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহও রান পেয়েছে আবার। টপ অর্ডারে তামিম ও সৌম্য ভালো জুটি গড়েছে। মোস্তাফিজ ভালো করেছে। রুবেল দারুণভাবে ফিরেছে। বিষয়গুলো আমাদের জন্য ইতিবাচক।
অন্যদিকে আইসিসির হিসাব অনুসারে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দুটি জয়ে ৯৪ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ পেছনে ফেলতে পারতো ৬ষ্ঠ স্থানে থাকা শ্রীলঙ্কাকে। তাদের এখন ৯৩ পয়েন্ট। চারটি ম্যাচই জিতলে মাশরাফিদের অর্জন হতো ৯৭ পয়েন্ট। কিন্তু এখন সে সুযোগ নেই। উল্টো পরিস্থিতি এমন যে বাকি দুটি ম্যাচ হারলে ৮৭ পয়েন্ট নিয়ে মাশরাফিদের নেমে যেতে হবে পাকিস্তানের নিচে। গত ১লা মে আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিং বার্ষিক হালনাগাদের পর বাংলাদেশের এখন ৯১ পয়েন্ট। আট নম্বরে থাকা পাকিস্তানের পয়েন্ট এখন ৮৮। এখন শেষ দুটি ম্যাচে জয়ই পারে বাংলাদেশকে র‌্যাঙ্কিংয়ে অবনমন থেকে রক্ষা করতে।
এ বছর ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত র‌্যাঙ্কিংয়ে ৮ নম্বরে থাকা দলই আইসিসির ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে। ৯ এ থাকা দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের চেয়ে বাংলাদেশ এখনো ১২ পয়েন্ট এগিয়ে থাকলেও আসন্ন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও রেটিং পয়েন্ট হারানোর শঙ্কাও আছে। সেখানে বাংলাদেশ ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি ম্যাচ খেলবে। তাই ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার স্বপ্ন খানিকটা হুমকিতে।
বুধবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ করেছিল ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান। সবুজ ঘাসের উইকেট হলেও ধারাভাষ্যকার ও ক্রিকেট বোদ্ধাদের মতে এখানে বাংলাদেশ অন্তত ২৮০/২৯০ রান করতে পারতো। বোলিংয়ে স্পিনাররা তাদের সঠিক ক্ষমতাও দেখাতে পারেনি। তবে এ হারের ব্যর্থতার দায় নিজের কাঁধেই নিয়েছেন মাশরাফি। তার সঙ্গে দলের সব বিভাগে উন্নতির তাগিদও দিয়েছেন তিনি। মাশরাফি বলেন, ‘সব জায়গায়ই উন্নতি করতে হবে। ফিল্ডিং অবশ্য আজকে ভালোই ছিল। কিন্তু ব্যাটিং ও বোলিং ভালো করতে হবে। আজকে যেমন বলেছি, ২০ রানের মতো কমতি ছিল। বোলিংয়েও শুরুতে উইকেট নিতে হবে।’

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর