ইলিশ রক্ষা কার্যক্রমে বরগুনায়

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নানা সংকটের কারণে ব্যাহত হচ্ছে বরগুনার মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম। দ্রুত গতির নৌযান ও জনবল সংকটের কারণে তারা বিষখালী বলেশ্বর ও পায়রা নদী বিস্তীর্ণ এলকায় মা ইলিশ রক্ষায় ব্যাহত হচ্ছে নিয়মিত টহল ব্যাহত হচ্ছে বরগুনার মৎস্য বিভাগের।

তাতে সুযোগ নিয়ে অসাধু জেলেরা মা ইলিশ শিকার করেই চলেছে। যাতে মা ইলিশ রক্ষার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে চরমভাবে। ভেস্তে যেতে বসেছে ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ। তাতে চলতি মৌসুমে ইলিশের উৎপাদন হ্রাস পাবে বলে মনে করছেন মৎস্যজীবীরা।

পাথরঘাটা উপজেলার ট্রলার মালিক আফজাল হোসন হাওর বার্তাকে জানান, এবছর জোরালো টহলের আওতার বাহিরে থাকছে বলেশ্বর নদী ও বঙ্গোপসাগেরর মোহনার বিস্তীর্ণ এলাকা। ফলে নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও প্রতিদিন মা ইলিশ শিকার করছে জেলেরা। এসব মাছ অনেকটা প্রকাশ্যে বিক্রি করলেও তেমন কোন পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে মৎস্য বিভাগকে।

বলেশ্বর তীরের জেলে আসলাম হাওর বার্তাকে জানান, ট্রলারে করে সৎস্য বিভাগ টহল দিলেও অনেক সময় তাদের উপস্থিতিতেও মা ইলিশ শিকার করছে অসাধু জেলেরা। দ্রুত গতির নৌযান না থাকায় তাদের আটক করতে পারছেনা মৎস্য বিভাগ। এছাড়াও গত বছরের তুলনায় এবছর মৎস্য বিভাগের জোরালো টহল নেই বলেশ্বর নদীতে। এ সুযোগে প্রতিদিনই মা ইলিশ শিকার হচ্ছে।

এ বিষয়ে বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তাফা চৌধুরী হাওর বার্তাকে বলেন, গত বছরের তুলনায় এবছর মা ইলিশ রক্ষার জন্য মৎস্য বিভাগের তৎপরতা কম থাকায় ইলিশের উৎপাদন চরমবাবে ব্যাহত হতে পারে। ফলে জেলেদর আবারো দুর্দিন দেখা দেবে। গত বছর অধিক পরিমাণে মা ইলিশ রক্ষার কারনে জেলদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়েছিল। যার ফেলে ইলিশের দাম যেমন সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে ছিল, তেমনি ট্রলার মালিক ও জেলেরাও লাভবান হয়েছিল।

তিনি আরো বলেন, এ বছর মা ইলিশ রক্ষার কার্যক্রম অনেকটা কম। এর ফলে ইলিশের উৎপাদন ব্যাহত হবে। দামও বেড়ে যাবে ইলিশের। লোকসান গুনতে হবে ট্রলার মালিকদের।

বিষয়টি স্বীকার করে বরগুনা পাথরঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মুরাদ হোসেন প্রামাণিক হাওর বার্তাকে বলেন, মা ইলিশ রক্ষার অভিযান পরিচালনার জন্য আমাদের জনবল ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রের সংকটের পাশাপাশি অর্থেরও অভাব বয়েছে। তারপরও আমাদের সাধ্যের সবটুকু দিয়ে মা ইলিশ রক্ষার জন্য দিনরাত চেষ্টা করে যাচ্ছি। একটি মা ইলিশও যাতে শিকার করতে না পারে সেজন্য আমাদের চেষ্টার কোন ত্রুটি নেই বলেও জানান তিনি।

অর্থাভাব ও দ্রুত গতির নৌযান সংকট এবং জনবল সংকটের কথা অস্বীকার করে বরগুনার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ওয়াহেদুজ্জামান হাওর বার্তাকে বলেন, ১ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত জেলার পায়রা, বলেশ্বর, বিষখালী ও বঙ্গোপসাগরে অভিযান চালিয়ে ইতোমধ্যেই ৮৮ হাজার মিটার জাল জব্দ করে পুড়িয়ে ফেলেছে।

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশ শিকারের অপরাধে আটকের পর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে ১০ জেলেকে। আার জরিমানা আদায় করা হয়েছে ২০ হাজার টাকা। ৩শ’ ৬৯ কেজি মা ইলিশও উদ্ধার করে স্থানীয় এতিমখানায় বিলিয়ে দেয়া হয়েছে।

তারপরও মা ইলিশ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা জানিয়েছেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর